বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার ১ মাস আগে করণীয়-বর্জনীয়

By | 30/04/2022
BCS preliminary mistakes

পরবর্তী বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার বাকি আছে ১ মাস। আসলে আপনি পাস করবেন না ফেল করবেন এটা এই ১ মাসের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভর করছে। আপনার গত ৬ মাস বা তার বেশি সময়ের পরিশ্রম এই মাস ঠিকভাবে কাজে না লাগানোর কারণে ব্যর্থতায় পর্যবসিত হতে পারে। তাই ভেবে চিনতে এই এক মাস কাজে লাগাতে হবে। প্রিলিতে কৌশল খুবই গুরুত্বপূর্ণ আর এই ১ মাস আপনার কৌশল প্রয়োগের মোক্ষম সময়। হাতে ৩ মাস সময় থাকলে এটা দেখুন।বিসিএস শেষ সময়ের প্রস্তুতি

বিসিএস শেষ সময়ের প্রস্তুতি

করণীয়

নতুন পড়া বাদ দিন, নতুন পড়া বাদ দিন।

প্রিলিতে পাস করার জন্য কী পড়তে হবে সেটা যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি “কী পড়তে হবে না” সেটাও অনেক গুরুত্বপূর্ণ। শুধু পড়তেই থাকলে কমন প্রশ্নের উত্তর নিয়ে কনফিউশন হবে। শুধু খেলেই তো হবে না হজমও তো করতে হবে। আর অতিভোজন ভালো নয় এটা সর্বজনস্বীকৃত।

রিভিশন, রিভিশন ও রিভিশন

পাস করতে হলে রিভিশন দিতে হবে। পাস করতে হলে রিভিশন দিতে হবে। নতুন পড়া বাদ দেওয়ার সাথে সাথে এতদিন যা পড়েছেন সেগুলো খুব ভালোভাবে রিভিশন দিতে হবে। রিভিশন দেওয়ার মূল কারণ নেগেটিভ কমানো। আপনি কখনই আপনার নিজের নাম, বাবার নাম, দাদার নাম এসব ভুলবেন না কারণ এগুলো নিয়মিত শুনে থাকেন। যদি আপনার দাদার দাদার নাম জিজ্ঞেস করা হয় সেটা আপনি হয়ত কনফিউশন নিয়ে উত্তর দিবেন কারণ এটা নিয়মিত শুনেন না, মানে রিভিশন দেন না। এটাই হচ্ছে প্রিলি পাসের টেকনিক বা রিভিশন দেওয়ার সুবিধা বা নেগেটিভ কমানোর উপায়। আশা করি বুঝাতে পেরেছি। তাহলে দেরি না করে রিভিশন দেওয়া শুরু করুন।

প্রতিদিন ৩০-৬০ মিনিট ম্যাথ করুন

ম্যাথ যে প্রিলি পাসের জন্য কতটা গুরুত্বপূর্ণ সেটা আপনি হয়ত পরীক্ষার হলে ঢোকার আগে টের পাবেন না। সাধারণ জ্ঞান, বাংলা এগুলো কমন আসলে সবাই পারবে আর খুব আনকমন আসলে খুব কম পরীক্ষার্থীই পারবে তাই এই বিষগুলো পার্থক্য গড়ে দিতে পারবে না। পার্থক্য গড়ে দিবে ম্যাথ, ইংরেজি, বিজ্ঞান, কম্পিউটার এসব বিষয়। ম্যাথ দ্রুত করা মানে সময় বেঁচে যাওয়া। আর বেঁচে যাওয়া সময় অন্য প্রশ্ন উত্তরে কাজ লাগানো যায়। ম্যাথ ছাড়া বাকিগুলো কিন্তু অন্যদের চেয়ে তেমন দ্রুত করার উপায় নাই। কম-বেশি সবার প্রায় একই সময় লাগবে। তাই রেগুলার ম্যাথ করুন ম্যাথে ভালো নম্বর এবং অন্য বিষয়ে পরোক্ষভাবে সাহায্য পাবার জন্য।

মাঝে মাঝে মডেল টেস্ট দিয়ে নেগেটিভ কমান

শুধু পড়লেই হবে না সেটা কতটুকু কাজ লাগছে সেটা যাচাই করার ভালো একটা উপায় হচ্ছে মডেল টেস্ট দেওয়া। নেগেটিভ ১০ নম্বরের নিচে নামিয়ে আনুন। দেখবেন মোট নম্বর কীভাবে লাফ দেয়। এই লেখা পড়ুন মডেল টেস্ট নিয়ে বিস্তারিত জানতে

বর্জনীয়

প্রশ্ন আবিষ্কার করা বাদ দিন

আপনি নিউটন, আইন্সটাইন না; একজন বিসিএস পরীক্ষার্থী। আবিষ্কারের দায়িত্ব তাদের হাতেই ছেড়ে দিন। আপনার কাজ হচ্ছে পড়া, বিগত বিভিন্ন প্রশ্নের আলোকে পড়া। এটা বিসিএস পরীক্ষা, নাসা বা গুগলের নিয়োগ এক্সাম না। প্রিলিকে সহজভাবে ভাবুন, প্রিলিও আপনার কাছে সহজ হবে। Don’t OVERTHINK.

কনফিউশনের পিছে ছুটে টাইম নষ্ট করবেন না

আর কত এভাবে আমার পিছে ছুটবে, আরও বেশি ছুটলে ফেল করবে প্রিলিতে। জ্বি ভাই, পরীক্ষায় কনফিউশন ছাড়া যেসব প্রশ্ন থাকবে সেটা দিয়ে আপনি একটা না দেড়-দুইটা প্রিলি পাস করে ফেলবেন। ফেসবুকে যেসব প্রশ্ন নিয়ে আপনাকে কনফিউজড করা হচ্ছে, গবেষক বানানোর অপচেষ্টা করা হচ্ছে একটু চোখ খুলে দেখুন সেগুলো কয়টা প্রিলিতে আসে। সেগুলো ছাড়া কি প্রিলি পাস করা যায় না? প্রশ্ন আবিষ্কার আর কনফিউশন সৃষ্টি এগুলোর ফাঁদে পড়বেন না।

শুধু সাধারণ জ্ঞান কমন ফেলে প্রিলি পাসের চিন্তা বাদ দিন

Grow up. শেষ মুহুর্তে মোটা সাইজের সাধারণ জ্ঞান বই কিনে দেউলিয়া হবেন না প্লিজ। আপনাকে দেখানো হবে প্রচুর কমন এসেছে তবুও আপনি ফেল করতে পারেন কারণ এই এক মাস সাধারণ জ্ঞান কমন ফেলার জন্য না। বাকি আরও গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলোর উপর গুরুত্ব দিয়ে পড়ালেখা করুন। সাধারণ জ্ঞানে অসাধারণ হবার চেয়ে ম্যাথ, ইংরেজি এসবে স্কিল বাড়ান। আজীবন কাজে দিবে, বিশেষকরে ইংরেজির দক্ষতা আপনাকে অনেক এগিয়ে রাখবে চাকরি প্রাপ্তিতে এবং কর্মক্ষেত্রে।

রিটেনের পিছে আর সময় দেওয়া যাবে না

যাদের রিটেন আছে তারা ১ মাসের চেয়ে কম সময় প্রিলির জন্য রাখলে রিস্ক হয়ে যেতে পারে। প্রথমবার প্রিলি পাসের পর আমি বাকি প্রিলিগুলোতে ১ মাস সময় “শুধু প্রিলির জন্য” রাখতাম। সেসময় রিটেনের কোনো পড়া পড়তাম না। আল্লাহর অশেষ রহমতে প্রতি বারই এই কৌশল কাজে দিয়েছে।

তাহলে উপরের টেকনিক অনুযায়ী পড়তে থাকুন। আশা করি সফল হবেন নেক্সট বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায়।

নিরন্তর শুভ কামনা।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published.