দ্রুত সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়

By | 03/02/2022
সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়

আপনি যদি সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়, আমল, দোয়া বা মন্ত্র সন্ধান করে থাকেন তাহলে এই লেখাটি আপনার অবশ্যই মনোযোগ দিয়ে পড়তে হবে এবং সেই অনুযায়ী অনুশীলন করতে হবে। উপায়গুলো অতি সহজ না তবে অসম্ভবও না। প্রতিবছর হাজার হাজার প্রার্থী চাকরি পাচ্ছে বুলেটপ্রুফ কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে

আপনি যদি আমেরিকা যেতে চান তাহলে আপনাকে আমেরিকার প্লেনে উঠতে হবে। আপন যদি আরও দ্রুতগামী বিমান যেটা উগান্ডা যাবে সেটাতে উঠেন তাহলে কোনোদিনই আমেরিকা যেতে পারবেন না। আপনি যাতে ঠিকভাবে দ্রুত আপনার গন্তব্য সরকারি চাকরিতে পৌঁছাতে পারেন তার জন্য এই লেখাটির আয়োজন।চলুন যাত্রা শুরু করি।

মহানবী স. বলেছেন সন্তানের কাছে মায়ের গুরুত্ব প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অবস্থান আর বাবার অবস্থান চতুর্থ। অর্থাৎ বাবা শুধু সান্তনা পুরস্কার পাবে। বিসিএস এর ক্ষেত্রেও অবস্থানটা নিচের মতো।

১. ধৈর্য

২. ধৈর্য

৩. ধৈর্য

জ্বি ধৈর্য বিসিএস এর জন্য প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় অপরিহার্য গুণাবলি। হিমালয় সমান ধৈর্য না থাকলে সরকারি চাকরি পাওয়া আপনার জন্য খুব কঠিন হয়ে যাবে।একটা বিসিএস শেষ হতে ২-৩ বছর বা তার চেয়ে বেশি সময়ও লাগে। ৪০তম বিসিএস এর দিকে একটু তাকালেই অনেকেই হতাশ হয়ে পড়বেন।

৪. মেধা—শুধু ধৈর্য থাকলে হবে না এর সাথে মেধার সমন্বয় থাকতে হবে। ম্যাথে ও ইংলিশে মিনিমাম কিছুটা দক্ষতা থাকতেই হবে। লিখিত পরীক্ষা ফ্রি হ্যান্ড রাইটিং এর উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল তাই আন্দাজে কিছু লিখলে ভালো ফল প্রত্যাশা করা সমীচীন নয়। রিটেন পরীক্ষায় প্রেজেন্টেশনের ক্ষেত্রেও মেধা স্বকীয়তার পরিচয় তুলে ধরতে পারে।

৫. পরিশ্রম—পরিশ্রম করতে হবে তবে সেটা যেন গাধার মতো না হয়। পরিশ্রম করতে হবে কৌশল অনুযায়ী। গাধার মতো পরিশ্রম করে কী লাভ যদি বনের রাজা হয় সিংহ? সরকারি চাকরি পাওয়ার জন্য দেশের সেরা ছাত্রদেরকেও পরিশ্রম করতে হয়েছ। আপনিও তাদের মতোই। এমনকি রিটেন ২১ ঘণ্টার মতো লিখতে হয়। এটা প্রচণ্ড মানসিক ও শারীরিক পরিশ্রম ছাড়া অসম্ভব।ইতিহাস বলে পরিশ্রম পরিশ্রমীকে বিনা পারিশ্রমিকে বিদায় দেয় না।

৬. ভাগ্য—ভাগ্যে থাকলে কেউ আপনাকে আটকাতে পারবে না তবে তাই বলে হাত পা গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না। নন ক্যাডার নিয়োগের ক্ষেত্রে ভাগ্য ব্যাপক নির্ভরশীল।  ৩৮তম বিসিএস পরীক্ষায় আইসিটি এর জন্য ২৫০+ সিট ছিল। আমার পরিচিত একজন পিওর বেকারের লাস্ট বিসিএস ছিল ৩৮ এবং জীবনের শেষ এক্সাম ছিল এটা। আল্লাহর অশেষ রহমতে তিনি সাধারণ শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হয়েছেন। বলা যায় না হঠাৎ আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেন। আপনি না হলেও আপনার ফ্যামিলি মেম্বার অসুস্থ হয়ে যেতে পারে। ভাগ্য গ্রিন কার্ড না দিলে অসম্ভব পরিশ্রমও হার মেনে যায় তবে ভাগ্য কখনও পরিশ্রমী, সাহসী ও মেধাবীদের খালি হাতে ফিরিয়ে দেয়নি।

৭. একাগ্রতা– (Focus) সরকারি চাকরি করব না কি বেসরকারিতে ঢুকে যাব না কি বিদেশ চলে যাব? এসব খুব ভালোভাবে ভেবে তারপর সিদ্ধান্ত নিয়ে কাজে নেমে পড়তে হবে। টার্গেট চেইঞ্জ করা যাবে না বারবার। সামান্য বিচ্যুতি আসতে পারে; আপনি একটুর জন্য প্রিলি/রিটেন/ভাইভাতে প্রত্যাশিত ফলাফল নাও পেতে পারেন তাই বলে সাথে সাথে অন্য কোথাও ফোকাস করা ঠিক হবে না।

৮. নিয়মানুবর্তিতা– পরিশ্রম রেগুলার না করলে লাভ নেই।আল্লাহ ইবাদতের ক্ষেত্রে একদিন ব্যাপক ইবাদত করলাম পরের দিন আর খবর নাই এমন আচরণ আল্লাহও পছন্দ করেন না। খেয়াল করে দেখেন ভার্সিটি পড়ার সময় “নেক্সট সেমিস্টারে ফাটাইয়া ফেলমু” এই কথাটা কয় বার বলেছেন? মাস্টার্স শেষ হয়ে গেল অনেকের সেই নেক্সট সেমিস্টার আসল না আজও। তাই রুটিন করে পরিকল্পনা অনুযায়ী পড়ুন। একটি কার্যকরী প্ল্যান আপনাকে অনেক দূর এগিয়ে রাখতে পারে।

৯. কিছুটা অসামাজিক— এখন কিন্তু টেস্ট ম্যাচের প্রতি বল দেখার আর টাইম নেই। আড্ডাবাজি, সিনেমাবাজি, গেমিং, ফেসবুকিং কমিয়ে দিন যতটুকু পারা যায়। মেয়েদের মতো সারাদিন ঘরে বসে থাক কেন? এমন করলে জীবনে কোনো দিন উন্নতি করতে পারবে না। কথাগুলো আমাকে শুনতে হয়েছে বন্ধুমহলের কাছ থেকে। এগুলো শোনার জন্য প্রস্তুত থাকুন। হেসে খেলে কেউ আর এখন সরকারি চাকরি পায় না। যদি পায় সে মিথ্যা কথা বলছে বা সরলপথে চাকরি পায়নি।মুল কথা If you want to change your life, change your lifestyle.

১০. চোখ কান খোলা রাখা— Be smart. এমন প্রার্থী আছে্ন সার্কুলার কবে হয় সেটাও জানেন না। সন্ধ্যা ৬টার সময় আবেদন করার ডেডলাইন না কি রাত ১২টা সেটা না জানার কারণে কেউ কেউ বিসিএস মিস করেন।পেপার পড়বেন, টিভি দেখবেন যাতে আপডেটেড থাকেন। এত বই পড়ে কী লাভ যদি ভাইভা বোর্ডে গুছিয়ে কথাই বলতে না পারেন?

১১. সাধ্য অনুযায়ী সাধ– আপনি যদি কোনোভাবেই ৯ম গ্রেডের জবে পাস করতে না পারেন তাহলে পাশাপাশি ১০ম গ্রেডের জবে এপ্লাই করুন। বয়স ২৮ বা সাড়ে ২৮ হলে ১০-১৩ গ্রেড দেখতে পারেন।এই পরিকল্পনাই হতে পারে আপনার সরকারি চাকরি পাওয়ার উপায়।পরে আফসোস করার চেয়ে আগে থেকেই ট্রাই করা ভালো। পছন্দ না হলে ছেড়ে দিবেন। আশা করি বুঝাতে পেরেছি।যারা ২-৩টি বিসিএস প্রিলি ফেল করেছেন তাদের ক্ষেত্রে কথাটি বেশি প্রযোজ্য।

সরকারি চাকরি পাওয়ার আমল, দোয়া

কোনো আমল বা দোয়াই কাজে আসবে না যদি আপনি নিয়মিত পড়াশুনা না করেন। নিয়মিত পড়ালেখার পাশাপাশি নিয়মিত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে সাহায্য চান, তাহাজ্জজুদের নামাজ পড়ুন, বেশি বেশি দোয়া ইউনুস পড়ুন। তবে দোয়া বা আমল তখনই ফলপ্রসু হওয়ার আশা করা যায় আপনি যখন মূল কাজ অর্থাৎ সরকারি চাকরি পাওয়ার প্রস্তুতি ভালোভাবে নিবেন।

নিরন্তর শুভ কামনা।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published.