BCS Cut Marks বের করুন পরীক্ষার হলে

By | 30/08/2023
BCS cut marks

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষা দেওয়ার পর সবার মনে প্রথম যে প্রশ্নটা আসে সেটা হচ্ছে এবারের BCS cut marks কত? কাট অফ মার্ক নিয়ে ফেসবুকে রীতিমত তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ লেগে যায়। আসলে পরীক্ষার হলে থাকা অবস্থাতেই চিন্তাটা মাথায় ঘুরপাক খেতে থাকে। পরীক্ষার হলেও কিন্তু প্রশ্ন দেখে কাট অফ মার্ক আন্দাজ করা যায়। সেটা জানতে হলে এই লেখাটি মনোযোগ দিয়ে পড়ুন।

চলুন প্রথমে জেনে নেই বিগত বিভিন্ন বিসিএস পরীক্ষার cut marks। এখন যেহেতু নতুন সিলেবাস অনুযায়ী পরীক্ষা হচ্ছে তাই আমরা 35 BCS preliminary cut marks পর্যন্ত উল্লেখ করব।

একটা বিষয় জেনে রাখুন পিএসসি কখনই প্রিলিমিনারি পরীক্ষার কাট অফ মার্ক প্রকাশ করে না। আমরা যারা পরীক্ষার্থী তারা এটা অনুমান করি এবং আমাদের অনুমান যথেষ্ট কাছাকাছি হয়ে থাকে। সরকারী কর্ম কমিশন কিন্তু প্রিলি পরীক্ষার প্রশ্নের উত্তর দেয় না এবং কিছু প্রশ্ন নিয়ে কনফিউশন, সন্দেহ সব সময় থাকে তাই কাট অফ মার্ক বের করা একটি জটিল প্রক্রিয়া।

BCS Cut Marks সম্ভাব্য

45 BCS

44 BCS

43 BCS

41 BCS

40 BCS

38 BCS

37 BCS

36 BCS

35 BCS

১১৫

১২০

১১০

৯৫

১০০

১১০

৯৫

১০৮

৮৫

পরীক্ষার হলে কাট অফ মার্ক নিয়ে ধারণা পাবার উপায়

বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার প্রশ্ন “একপলক” দেখে যদি মনে হয় মূলত বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান অংশে বিগত বিসিএস এবং বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্ন গুরুত্ব পেয়েছে, তাহলে আপনি আশা করতে পারেন কাট অফ মার্ক ১০৮-১১০ এর আশেপাশে হবে। তবে সোহরাব হোসাইন সরকারী কর্ম কমিশনের চেয়ারম্যান হবার পর থেকে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার তারিখ অনেক আগে দেওয়া হয় তাই এখন কাট অফ মার্ক বৃদ্ধি পেয়েছে। যেমন ৪৪তম বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষায় ১২০ এর আশেপাশে ছিল কারণ অনেক আগে পরীক্ষার তারিখ জানা গেলে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নেওয়া যায়, কোনো বিষয়ে নিজের দুর্বলতা কাটানো যায়। যেমন কেউ গণিতে দুর্বল হলে সেটা কাটানোর সুযোগ আছে

আর যদি প্রশ্ন বিশ্লেষণ করে আপনার কাছে মনে হয় বিগত বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষার প্রশ্নের চেয়ে নতুন বা প্যাঁচানো প্রশ্নের পরিমাণ বেশি আছে, তাহলে আশা করতে পারেন এই বারের প্রিলিমিনারি পরীক্ষার কাট অফ মার্ক ৯৫-১০০ এর মতো হবে। এটা একটা rough idea। এই আইডিয়াটি পেতে আপনার এক-দেড় মিনিট বা আরও কম সময় লাগতে পারে। পরীক্ষার শুরুতেই ধারণাটি পেলে সেটা আপনার জন্য পজিটিভ রেজাল্ট নিয়ে আসতে পারে। আমি ৩৭তম-৪১তম প্রতিটি বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষার শুরুতেই এটা করেছি এবং সেই অনুযায়ী উত্তর করেছি এবং আল্লাহর অশেষ রহমতে সফলও হয়েছি। যেমন আগে থেকে যদি জানেন আপনার এক কি.মি দৌড়াতে হবে নাকি ৫ কি.মি. দৌড়াতে হবে তাহলে আপনার মানসিকভাবে সেভাবেই একটা প্রস্তুতি আসবে। আশা করি বোঝাতে পেরেছি। তবে প্রাথমিক ধারণার পরও আপনাকে প্রতিটি প্রশ্ন তার “মান” অনুযায়ী বিচার-বিশ্লেষণ করে উত্তর করতে হবে।

পরীক্ষার শুরুতে প্রশ্ন একপলক না দেখলে কি ফেল করবেন? অবশ্যই না। আপনি একপলক না দেখে একটা একটা করে উত্তর করতে পারেন, কোনো সমস্যা নেই। আমি শুধু আমার টেকনিকটা শেয়ার করলাম।

ইশ কাট অফ মার্ক একটু কম হলে পাস করতাম

কাট অফ মার্ক ১২০+ হওয়ায় আপনি টিকেননি তবে ১১০ হলে পাস করতেন; কথাটা সম্পূর্ণ ভুল। ১২০+ নয় ৮৫ হলেও আপনি ফেল করতেন। আপনাকে একটা নির্দিষ্ট লেভেলে পৌঁছাতে হবে পাস করার জন্য। সেই লেভেলে উঠতে না পারলে আপনি পাস করতে পারবেন না। কাট অফ মার্ক মূল হিসাব না। লেভেলটাই মূল ফ্যাক্ট।

আমি, আপনি শত চেষ্টা করেও এখন মেসি, সাকিব আল হাসান হতে পারব না। “মেধা বলে কিছু নেই পরিশ্রমই সব” এসব কথা ফেসবুকে প্রচুর লাইক, কমেন্ট ও শেয়ার পাবে কিন্তু বাস্তব জীবনে ধরা খাবে। প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় কেউ কম পরিশ্রম করে না। চাকরি পাবার জন্য আপনাকে একটা লেভেলে যেতেই হবে; there is no short cut। তাই হুজুগে শুধু বিসিএস, শুধু এন এস আই এর এডি, শুধু দুদকের এডি, শুধু বাংলাদেশ ব্যাংকের এডি এসব পরীক্ষা না দিয়ে আরও পরীক্ষা দিন। নিজের SSC, HSC রেজাল্ট ও অনার্সের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিবেচনায় আনুন।  আপনার যদি নিজেকে exceptional মনে হয় তাহলে exception বিবেচনায় আনুন। সুশান্ত পালের ৩ এর নিচে জিপিএ দেখে সবাই অনুপ্রাণিত হয়ে লাভ নেই। চুয়েটের ইঞ্জিনিয়ার আর ক,খ, গ প্রতিষ্ঠানের ৩ এর নিচে জিপিএ এক না। হাভার্ড ড্রপ আউট আর ছাগলনাইয়া কলেজ ড্রপ আউট এক না। মোটিভেশন প্রয়োজন তবে সেটা overdose হয়ে গেলে বিষের চেয়েও ধ্বংসাত্মক হতে পারে। আবারও বলছি আপনার যদি নিজেকে exceptional মনে হয় তাহলে exception বিবেচনায় আনুন।

কথা না data দেখুন। ফেসবুকে একজনের সরকারি চাকরি পাবার তথ্য অজস্র গ্রুপে শেয়ার হয় তাই মনে হয় সবাই সরকারি চাকরিজীবী কিন্তু ডানে, বামে তাকিয়ে দেখুন এই সংখ্যা অনেক কম পাবেন। আমার কথাগুলো তিক্ত শোনায় তাই হয়ত আমার ফ্যান, ফলোয়ার কম। আপনি ২-৩ বছর পর সবই বুঝতে পারবেন কিন্তু ততদিনে আপনার মূল্যবান সময় নষ্ট আর পকেটের টাকা তাদের দেওয়া হয়ে গেছে।

ব্রাহ্মণ টাইপের ক্যাডার না হলে ফেসবুকে আপনি হয়ত পাত্তা পাবেন না কিন্তু ১০ম গ্রেডের বা আরও নিচের গ্রেডের চাকরি পেলেও বাস্তব জীবনে অনেক পাত্তা পাবেন। ফেসবুকটা এখন অনেকটা সিনেমার মতো হয়ে গেছে, বাস্তবতা বিবর্জিত জগৎ।

কাট অফ মার্ক বা BCS preliminary pass mark নিয়ে গুজব

জেনারেল ক্যাডারে যারা আবেদন করেছেন এবং যারা টেকনিকাল বা বোথ ক্যাডারে আবেদন করেছেন তাদের তাদের কাট অফ মার্ক একই থাকে। এটা ভিন্ন নয়। কারও কথায় বিভ্রান্ত না হয়ে মনোযোগ দিয়ে সর্বোচ্চ শক্তি দিয়ে BCS preliminary preparation নিন।

BCS Preliminary Cut Marks যেসব বিষয়ের উপর নির্ভরশীল

# প্রশ্নের ধরন

৩৫, ৩৭, ৪০ ও ৪১ এর প্রশ্ন দেখুন আর ৩৬, ৩৮, ৪৩, ৪৪ ও ৪৫ এর প্রশ্ন দেখুন। পার্থক্যটা চোখে পড়ার মতো। বিগত প্রশ্নের প্রধান্য থাকলে কাট অফ মার্ক বেড়ে যায় আর নতুন ও জটিল প্রশ্নের আধিক্য থাকলে কাট অফ মার্ক কমে যায়।

৩৫তম বিসিএস ছিল নতুন নিয়মের প্রথম বিসিএস পরীক্ষা তাই বিসিএস পরীক্ষার্থীরা কিছুটা কনফিউশনে ছিলেন। গতানুগতিক ১০০ নম্বরের বদলে ২০০ নম্বরের পরীক্ষা এবং ১ ঘণ্টার বদলে ২ ঘণ্টার পরীক্ষা আসলে কেমন হবে সেটা নিয়ে সবাই কিছুটা হলেও দ্বিধাদ্বন্দে ছিলেন। এই পরীক্ষার প্রায় ২০-২২ হাজার প্রার্থীকে টেকানো হয় এবং কাট অফ মার্ক ছিল ৮৫ এর মতো।

# ক্যাডার সংখ্যা

৩৭তম বিসিএস পরীক্ষায় মাত্র ১২০০ এর মতো ক্যাডার সংখ্যা ছিল তাই পাস করানো হয়েছিল মাত্র ৮৫২৩ জনকে এবং আমি ছিলাম তাদের একজন। ক্যাডার সংখ্যা বেড়ে গেলে প্রিলিতে বেশি পাস করে অর্থাৎ কাট অফ মার্ক কমে যায়।

এই পরীক্ষায় ক্যাডার সংখ্যা কমের পাশাপাশি প্রশ্নও বেশ কঠিন ছিল। স্মরণকালের সবচেয়ে কঠিন প্রশ্ন বলা হয়েছিল ৩৭ বিসিএস প্রিলিমিনারি পরীক্ষাকে। কাট অফ মার্ক ছিল ৯৫ এর মতো।

# পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার সময়

আগে হঠাৎ করে প্রিলির ডেট দিত কিন্তু এখন অনেক সময় নিয়ে ডেট দেওয়া হয় তাই বিসিএস প্রিলির পাস নম্বর বেড়ে যায়।

আশা করি BCS cut marks নিয়ে একটি স্পষ্ট ধারণা পেয়েছেন।

নিরন্তর শুভ কামনা।

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published.