আমার বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা ও স্রোতের বিপরীতে কিছু পরামর্শ BCS Viva Experience and Suggestion

By | 27/05/2021
বিসিএস ভাইভা অভিজ্ঞতা BCS Viva Experience

সিরিয়াল : ২

বোর্ড : কামাল উদ্দিন

ডিপার্টমেন্ট : ইলেকট্রিক্যাল এন্ড ইলেকট্রনিক্স ইঞ্জিনিয়ারিং

ব্যাপ্তি : প্রায় ১৫ মিনিট

তারিখ : ২৯ জানুয়ারি, ২০১৮ (৩৭তম বিসিএস)

সালাম দিয়ে অনুমতি নিয়ে রুমে প্রবেশ করলাম। বসতে বললেন। বসার পর বললেন  introduce yourself। 

ইংরেজিতে বললাম যেহেতু ইংরেজিতে প্রশ্ন করা হয়েছে।

Introduction বলার সময় চেয়ারম্যান স্যার একটু অন্য কাজে বিজি হয়ে পড়েছিলেন তাই কিছুটা মিস করেছেন তাই বললেন ফ্যামিলি নিয়ে কিছু বলা হয় নাই। যাইহোক, কিছু অংশ আবার বললাম, স্যারের সাথে ভিন্নমত পোষণ করলাম না।

তারপর বৃষ্টির মত প্রশ্ন বর্ষণ শুরু হল। লেখাটি অনেক দিন পর লিখছি তাই কিছু প্রশ্ন মনে নেই। বেশিরভাগ প্রশ্ন ছোট ছোট ছিল, ভুলে যাবার এটাও একটা কারণ। আমাকে বাংলা, ইংরেজি দুই ভাষাতেই প্রশ্ন করেছেন। আমি চেষ্টা করেছি যে ভাষাতে প্রশ্ন করেছেন সেই ভাষাতেই উত্তর দিতে। কখনও কখনও বাংলায় কথা বলতে বলতে ইংরেজিতে প্রশ্ন করেছেন আবার ইংরেজিতে কথা বলতে বলতে বাংলায় প্রশ্ন করেছেন। কথা বলছেন একজন হঠাৎ করে প্রশ্ন করেছেন অন্যজন এমনও হয়েছে। কিছুটা চ্যালেঞ্জিং ছিল ব্যাপারটা তবে তেমন ঘাবড়ে যাইনি কারণ আমি প্রস্তুতি সেভাবেই নিয়েছিলাম।

প্রশ্ন শুরু :

বাম পাশের স্যার ক্যাডার চয়েজ বলতে বললেন।

সিরিয়ালি বললাম। কয়েকটা বলার পর থামতে বললেন।

এসডিজি-এর লক্ষ্য কতটি?

বললাম।

৫টি লক্ষ্য ইংরেজিতে বলুন। হুবুহু বলতে হবে বললেন।

হুবুহু শোনার পর একটু নার্ভাস হয়ে গেলাম। বাংলায় ১৭টিই পারতাম কিন্তু ইংরেজিতে মাত্র ২টা হুবুহু মনে ছিল। ২টা বললাম তারপর গতি কম দেখে অন্য প্রশ্নে চলে গেলেন।

আমার প্রথম চয়েজ ছিল বিসিএস ইকনমিক। বললেন, Give 5 reasons for your first choice.

৪টা বলার পর গতি কমে গেল। অন্য প্রশ্নে চলে গেলেন। ৫ম কারণ হিসাবে বললাম ইকনমিক ক্যাডারে বিদেশে প্রচুর যেতে হয়; আমি ট্রাভেলিং পছন্দ করি; এটা একটা কারণ হিসেবে বললাম কিন্তু এটা তাদের কাছে তেমন গ্রহণযোগ্য বা যৌক্তিক কোন কারণ মনে হল না। আমার তো এখনও মনে হয় ৫টা শক্তিশালী কারণ বলা কিছুটা কঠিনই সেটা যেকোন ক্যাডারের ক্ষেত্রে।

নতুন প্রশ্ন : Introduce your district?

বললাম। এই প্রশ্নের উত্তরটা আমি ব্যাপক ঘাঁটাঘাটি করে তৈরি করেছিলাম। ফলাফলও পেয়ে গেলাম। উত্তর বলা শেষে বাম সাইডের এক্সটারনাল খুব খুশি হলেন। ডান সাইডের এক্সটারনাল বললেন বাহ আপনি তো আপনার জেলাকে খুব সুন্দরভাবে রিপ্রেসেন্ট করেছেন। উনাদের এক্সপ্রেশন ছিল WOW হয়ে যাওয়ার মতন। আমিও মনে মনে খুশি হলাম এবং কনফিডেন্স পেলাম।

পরবর্তী প্রশ্ন আচ্ছা আপনি তো ইঞ্জিনিয়ারিং পড়েছেন। তাহলে গার্মেন্টস কপ্লায়েন্স নিয়ে আপনার ভাল ধারণা আছে। বলুন তো গার্মেন্টস কমপ্লায়েন্স কী? অবাক হলাম আমার সাথে প্রশ্নের relevance দেখে। সরি স্যার বললাম। এই প্রশ্ন আমাকে কেন করলেন বুঝলাম না। ডান পাশের স্যার বললেন বাংলাদেশের রেমিটেন্স কত? সঠিক বা কাছাকাছি কিছু মনে ছিল না তাই সরি বললাম। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের প্রধান কে? আমি ভুল করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় মনে করছিলাম তবে কিছুক্ষণের মধ্যেই টের পেয়ে সঠিক উত্তর মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নাম বললাম। তারপর আমাকে বলেন সিওর? আপনি সিওর তো? আমার সাথে ভালই মাইন্ডগেম খেলা শুরু করলেন। আমি এসব ক্ষেত্রে কী করতে হবে তা আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে এসেছি। তাই আত্মবিশ্বাসের সাথে সিওর বললাম। পরবর্তী প্রশ্ন আচ্ছা বলুন তো পিএসসি কোন মন্ত্রণালয়ের অধীন? এটার উত্তর শোনার পরও আগের মত বললেন আপনি সিওর তো? আমার কনফিডেন্স লেভেল বোঝার ট্রাই করছেন বুঝলাম। আমিও বললাম আমি hundred percent sure। তারপর আমাকে আর যাচাই করার চেষ্টা করলেন না তিনি।

আমাকে মূলত বোর্ড চেয়ারম্যান স্যারই প্রশ্ন করেছেন। বাকি দুইজন ৩-৪টি করে প্রশ্ন করেছেন।

আমি যেহেতু ইলেকট্রিকাল এন্ড ইলেকট্রনিক্সে ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়েছি আর স্যার এর সাথে রিলেটেড তাই তিনি অনেক প্রশ্ন করলেন।

রাউটার কী ?

উত্তর দিলাম।

আই এস পি কী? What does ISP do?

উত্তর দিলাম। ইংরেজি অংশের উত্তর ইংরেজিতে দিলাম। এক্সপ্রেশন দেখে মনে হল ভালই উত্তর দিয়েছি।

আমাদের কি কোন স্যাটেলাইট আছে?

বললাম আছে। আপনি সিওর তো আছে? এভাবে আমাকে টেস্ট করছিল। আমার কনফিডেন্স লেভেল চেক করছিলেন।

আমি খুব কনফিডেন্সের সাথে উত্তর দিলাম।

স্যাটেলাইটের নাম কী?

বললাম।

স্যাটেলাইট কি নির্দিষ্ট এলাকায় কাজ করে নাকি সমগ্র বিশ্বে?

উত্তরটা আমার ঠিকমত হয়নি। তখন এটা নিয়ে আমি বিস্তারিত জানতাম না। স্যার কিছুটা আশহত হলেন। বললেন আপনি ইঞ্জিনিয়ার; আপনাকে আরও স্পেসিফিক হতে হবে।

আমরা ব্যান্ড উইথ কি রপ্তানি করি নাকি আমদানি করি?

আমরা মূলত দুইটাই করি। স্যার বললেন আমদানি যদি করতে হয় তাহলে আবার রপ্তানি কেন করব? ভালই প্যাঁচালেন। আমি তখন ভাল কোন যুক্তি দিতে পারিনি। স্যার আরও স্পেসিফিক উত্তর আশা করছিলেন।

আমাদের বাসায় ব্যবহৃত কারেন্টের ফ্রিকোয়েন্সি কত?

বললাম।

Vsion 2021 এর বাংলা কী?

বললাম।

২০২১ সাল কেন গুরুত্বপূর্ণ?

বললাম।

এর আগে বিসিএস পরীক্ষা দিয়েছি কিনা সেটাও জানতে চাইলেন।

ভাইভা বোর্ডে শেষ প্রশ্ন—তাজমহল বানাতে কি রড ব্যবহৃত হয়?

প্রশ্ন শুনে আমার একবার মনে হল স্যার শুনতে চাচ্ছেন “আমি কি সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেছি আমাকে এসব বলছেন কেন?” যাইহোক বোকার মত কোন কিছু বললাম না। আমি উত্তর দিলেই যুক্তি দিতে বলবেন। তাই কোন রিস্ক নিলাম না। বললাম সরি স্যার জানি না। তখন রুমে স্যারের অফিস সহকারী টাইপের কেউ হয়ত আসলেন। আমাকে আসতে বললেন। আমিও বের হবার জন্য রেডি হলাম। বললেন বাবা কী করেন? বললাম। স্যার বললেন আপনাকে আরও জানতে হবে। হয়ত কিছুটা লজ্জা, কিছুটা হাসির এক্সপ্রেশন দিয়ে বললাম জ্বি স্যার। এভাবে জীবনের প্রথম ভাইভা শেষ হল। আমার কাছে মনে হয়েছে আমার ভাইভা মোটামুটি ভালই হয়েছে। আমি ৭০% প্রশ্নের উত্তর দিতে পেরেছিলাম। ছোট ছোট প্রশ্ন বেশি হয়েছে। যেটা পারি নাই সেটা নিয়েই আলোচনা হয়েছে। বোর্ড বেশ ফ্রেন্ডলি ছিল।

ফলাফল :

১২ জুন, ২০১৮ তারিখে প্রকাশিত ক্যাডার লিস্টে রোল আসেনি। নন ক্যাডার লিস্টে ছিল।

১৩ মার্চ ২০১৯ তারিখে প্রকাশিত নন ক্যাডার ১ম লিস্টে রোল আসেনি।

নন ক্যাডার ২য় লিস্টে রোল আসেনি।

নন ক্যাডার ৩য় লিস্টে রোল আসেনি।

নন ক্যাডার ৪র্থ লিস্টে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা (১০ম গ্রেড) হিসাবে সুপারিশপ্রাপ্ত। অক্টোবর ২২, ২০১৯ তারিখে এটি প্রকাশিত হয়।

এখন একটু নির্মম বাস্তবতার কথা বলি :

বাস্তবতা হচ্ছে বেশিরভাগই ননক্যাডার পাবেন তাই ভেঙে পড়লে চলবে না। বিসিএস ম্যারাথন, স্প্রিন্ট না। আপনাকে বিশ্বকাপ একবার জিতলেই হবে বারবার না। শচিন টেন্ডুলকার, ম্যারাডোনারা প্রথম বারেই বিশ্বকাপ জেতেননি। আর ক্যাডার মানে বিশ্বকাপ সেটা বলতেও আমি নারাজ। কেউ ক্যাডার হয়ে চরম অসন্তুষ্ট আছেন কেউ হয়ত প্রাইভেট চাকরি করেও তার চেয়ে বেশি সুখী আছেন। আজ আমরা বেকার তাই মনে হচ্ছে একটি সরকারি চাকরি জীবনের সকল গ্লানি মুছে দিবে, সব কিছু হাতের মুঠে নিয়ে আসবে। মোটেও সেরকম না।

চাকরি করে আমি, আপনি বড়জোর সচিব হতে পারব। ভেবে দেখুন সচিব মহোদয়ের কি মন্ত্রী হতে ইচ্ছা করে না? মন্ত্রী মহোদয়ের কি প্রধানমন্ত্রী হতে ইচ্ছা করে না? উনার কি আরও বড়, শক্তিশালী দেশের প্রধান হতে ইচ্ছা করে না? আমেরিকা, রাশিয়ার প্রেসিডেন্টরাও হয়ত “সর্বশক্তিমান” হতে চান যেন যা ইচ্ছা তাই করতে পারেন। আপনার ইচ্ছা, চাহিদার ওপরই আপনার জীবনের সন্তুষ্টি নিহিত। ভুলে যাবেন না সবারই সীমাবধ্যতা আছে। বৈষয়িক প্রাপ্তি কখনও মানুষকে চরম সন্তুষ্টি এনে দিতে পারে না। বড়জোর সাময়িক শান্তি দিতে পারে। তাই একটি চাকরি কখনই আমাদের চরম সন্তুষ্টি এনে দিতে পারে না। এটা সব মুশকিলের আসান এমন কিছু না। ক্যাডারদের দেখে হয়ত ভাবছেন উনি চিরসুখী, সুখের সাগরে ভাসছেন, উড্ডয়ন করছেন নিরন্তর। বিষয়টা মোটেই তেমন না। কাছে গিয়ে দেখলে ধারণা বদলে যেতে পারে। বিসিএস লেজেন্ড সুশান্ত পালের ২৩.৫.২০২১ তারিখের স্ট্যাটাস  “চাকরিজীবী হওয়াটা সহজ নয়—ঘরেও জিম্মি হয়ে থাকতে হয়, অফিসেও জিম্মি হয়ে থাকতে হয়। ব্যবসাই ভালো!” কী বুঝলেন? মূলত, অল্পতে যারা তুষ্ট, তারাই প্রকৃত সুখী।

আসলে মানুষের জীবনটা অনেক ব্যাপক; একটি চাকরি তার অংশবিশেষ মাত্র। সম্পূর্ণ জীবনকে সেটা কখনই প্রভাবিত করতে পারে না। কথাগুলো আমার অভিজ্ঞতার আলোকে বলা। আমিও একসময় “বিসিএস সাইকো” ছিলাম কিন্তু সময়ের সাথে আমার মাঝে অনেক পরিবর্তন এসেছে। ৩৭তম ভাইভা পাস করেছি কিন্তু ৩৮তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় ফেল করে ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলাম। কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছিলাম না। তারপর আমার জীবনে কিছু আমূল পরিবর্তন আসে। তারপর থেকে আমি অনেক পজিটিভ চিন্তা করা শিখেছি। পরে বুঝতে পারি রিটেনে ফেল না করলে এই “অমূল্য শিক্ষাটা” আমাকে কেউ শেখাতে পারতেন না। সেই হিসাবে ভালই হয়েছিল : আলহামদুলিল্লাহ। আমি আশাপাশে তাকিয়ে দেখলাম আমি ফেল করলেও আমার পরিচিত ৪-৫ জন পাস করেছেন যাদের প্রত্যকের বাবা রিটেনের রেজাল্ট দেবার আগেই পৃথিবী থেকে বিদায় নিয়েছেন। সেই হিসাবে আমি অনেক ভাগ্যবান। পৃথিবীর কোন ক্ষমতা, পদ বা কোন কিছুর বিনিময়ে আমি আমার পবিরারের সদস্যদের বিদায় মেনে নিতে পারব না। আমি মনে করি, বিশ্বাস করি আপনিও আমার মত। আমার মনোবল এখন অনেক দৃঢ় হয়েছে। তাই বলছি যারা ক্যাডার বা ননক্যাডার হতে পারবেন না, তারা জীবনের শেষ এটা কখনই ভাববেন না। পৃথিবীতে কোটি কোটি মানুষ না খেয়ে আছেন, আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের ছেলে মারা গিয়েছে, সিলভেস্টার স্ট্যালোন মানে র‍্যাম্বোর/রকির ছেলে মারা গিয়েছে, শাহরুখ খানের প্রতিষ্ঠা তার বাবা মা কেউ দেখে যেতে পারেননি, সম্প্রতি বিল গেটসের সংসার চুরমার হয়ে গেছে, সালমান খান তো কোনো নারীকেই পার্ফেক্ট মনে করছেন না, আর দুনিয়া কাঁপানো মেসিতো খুব সম্ভবত আজীবন আক্ষেপ করবেন বিশ্বকাপ না জেতার কারণে যেই কাপ শুধু আর্থিক দিক বিবেচনা করলে তিনি কতগুলি কিনতে পারবেন তিনি নিজেই জানেন না। আমি যা বোঝাতে চাচ্ছি সেটা হচ্ছে দূর থেকে অনেক কিছুই চাঁদের মত সুন্দর দেখা যায় কিন্তু কাছে গেলে বোঝা যায় শুরু গর্ত আর গর্ত। জীবনে অপ্রাপ্তি থাকবেই, আপনি ননক্যাডার বা সমাজের চোখে অজনপ্রিয় ক্যাডার পেয়েছেন কিন্তু আপনার বন্ধু যাকে আপনি আপনার মেধার সাথে তুলনা করতে রাজি নন, তিনি ক্যাডার বা সমাজের চোখে জনপ্রিয় ক্যাডার হয়ে যাবেন—এটাই জীবন। সব কিছু আমাদের হিসাব অনুযায়ী হবে না। হলে দক্ষিণ আফ্রিকা অন্তত একবার ক্রিকেট বিশ্বকাপ জিতত।

হয়ত ভাবছেন আমি নেগেটিভ টাইপ মানুষ। যে যুদ্ধে বেশিরভাগ কাঙ্ক্ষিত ফল পাবেন না, সেখানে শুধু সফলতার সুফল দেখানো আর ব্যর্থতাকে বাদ রাখা অনুচিত বলেই আমি মনে করি, বিশ্বাস করি। আপনাকে সব কিছুর জন্যই প্রস্তুত থাকতে হবে। পরিশ্রম করলেই যদি ক্যাডার হওয়া যেত তাহলে ঘরে ঘরে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো, উসাইন বোল্ট থাকত। আপনার পরিশ্রম, মেধা ভাগ্যের কাছে হার মানতে বাধ্য হতে পারে। যদিও সফল হলে কেউ ভাগ্যকে ক্রেডিট দিতে চান না; মেধা আর পরিশ্রমকেই সব নিয়ামক বলে থাকেন। তবে কেন যেন মেসি প্রতিটি গোল করার পর সৃষ্টিকর্তাকে ধন্যবাদ দিতে ভুলে যান না; বড় বড় ক্রিকেটারেরা সেঞ্চুরি করে আকাশে পানে চেয়ে দেখেন।

এত খারাপ পরীক্ষায় দিয়েও কীভাবে পাস করলাম? এটা বলতেও শুনেছি; পরে তিনি ক্যাডারও হয়েছেন। রিটেন খারাপ হয়েছে তাই ভাইভায় এটেন্ড করবে না এমন ব্যক্তিকেও ক্যাডার হতে দেখেছি; প্রায় ৪০ মিনিট পর পরীক্ষার হলে উপস্থিত হয়েছে এমন ব্যক্তিকেও প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত হতে দেখেছি। হয়ত বিশ্বাস করছেন না; আমি জানি। আমি যেটা বোঝাতে চাচ্ছি সেটা হচ্ছে বিসিএস এমন একটা এক্সাম যেটাতে আপনার প্রত্যাশার বাইরে অনেক কিছুই হতে পারে। This is the ugly truth। আপনার পরিচিত সব ক্যাডাররা যেমন মেধাবী, তেমনি তাদের একই লেভেলের বন্ধুরাও ক্যাডার হতে না পারায় কি আজ অমেধাবী? । মূল কথা হচ্ছে আপনি আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা করবেন, পেলে আলহামদুলিল্লাহ, না পেলেও আলহামদুলিল্লাহ এমন মনোভাব বজায় রাখবেন। অন্তরে peace অনুভব করবেন। আমাদের মানসিক শান্তি এনে দিতে পারে শুধু আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি, জীবনদর্শন; কোন চাকরি নয় সেটা যদি আপনার ড্রিম জব হয় তবুও কারণ জীবনটা অনেক বিস্তৃত, ব্যাপক এবং বৈচিত্র্যময়। আমার কথাগুলো খারাপ লাগলে সরি। আমি আমার কয়েক বছরের অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম এই পোস্টের মাধ্যমে। আর কথা বাড়াচ্ছি না। আমার জন্য দোয়া করবেন কারণ আমার বিসিএসযুদ্ধ এবং জীবনযুদ্ধ এখনও শেষ হয়নি। ৩০ পার হওয়া এই ব্যক্তিটির কাছে জীবনের প্রায় সব কিছুই এখনও too close, too far!

আল্লাহ হাফেজ।

আরও পড়ুন

বিসিএস ভাইভায় ভালো করার উপায়

BCS Preparation

শেয়ার করুন বন্ধুর সাথে

Leave a Reply

Your email address will not be published.